মেটাভার্স (Metaverse) একটি বিস্তৃত ধারণা। মেটা (meta) শব্দটি গ্রিক থেকে এসেছে, যার অর্থ ওপর বা পরে। মেটা এবং ইউনিভার্স (universe) শব্দের সমন্বয়ে মেটাভার্স শব্দটির সৃষ্টি। শব্দ অনুযায়ী মেটাভার্স অর্থ দাঁড়ায়, পৃথিবীর বাইরের জগৎ। অর্থ অনুসারে বিষয়টি কোনদিক থেকে কম নয়। মেটাভার্স নিয়ে এখন পর্যন্ত যা যা জানা গিয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে এটি হবে ভিআর প্রযুক্তি নির্ভর। এর প্রধান উপকরণ হবে অগমেন্টেড রিয়েলিটি গ্লাস (augmented reality glass)। এতে আমাদের চোখ আর চারকোণা ফোনের ডিসপ্লেতে সীমাবদ্ধ থাকবে না। চশমা পরে চোখের সামনেই দেখা যাবে ত্রিমাত্রিক বিশ্ব। কথা বলা, মিটিং সবই মনে হবে সামনা-সামনি হচ্ছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট পরলেই ব্যবহারকারী চলে যাবে ভার্চুয়াল জগতে। এমন সব কাজ করা যাবে, যা এখন শুনলে সবটাই মনে হবে অবিশ্বাস্য ও কাল্পনিক। এই প্রযুক্তির ফলে ভার্চুয়াল জগতকে মনে হবে সত্যিকারের বাস্তব পৃথিবী।
মেটাভার্সের সাহায্যে এমন এক জগৎ এর সৃষ্টি হবে যে, ঘরে বসে অনলাইন শপিং করার সময় একটি পোশাক পছন্দ করে ওই পোশাকের একটি ডিজিটাল সংস্করণ গায়ে দিয়ে দেখা যাবে। এমনকি অনলাইনে একটি গাড়ি ক্রয় করতে চাইলে, বিশ্বের যেকোনো স্থানে গাড়িটি চালিয়ে দেখে নেয়া যাবে ভার্চুয়ালি। বিষয়টা হয়তো বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনী মনে হচ্ছে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে এখন আর সেটা কল্পনার পর্যায়ে নেই। এই প্রযুক্তি তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু করে হয়ে গিয়েছে। মেটাভার্স সম্পর্কে ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট ম্যাথুউ বল বলেছেন, “এটি আমাদের ডিজিটাল ও ফিজিক্যাল ওয়ার্ল্ডকে বিস্তৃত করবে।” তথ্য-প্রযুক্তিবিদ জাকারিয়া স্বপন বলেছেন, “এটাকে থ্রি-ডি ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড বলতে পারেন। স্ক্রিনে এখনকার বেশিরভাগ স্পেস হচ্ছে টু-ডি বা দ্বিমাত্রিক। কিন্তু মেটাভার্স জগতে আমাদের অভিজ্ঞতা হবে থ্রি-ডির মতো। টেলিফোনে কারো সঙ্গে কথা বললে মনে হবে সামনা-সামনি আলাপ করা হচ্ছে।”
‘মেটাভার্স’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিলো লেখক নিল স্টিফেনসন (Neal Stephenson) এর উপন্যাসে। ২০১৭ সালে ভ্যানিটি ফেয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্টিফেনসন জানান, তার নিজের একটি বিজ্ঞান-কল্পকাহিনীতে তিনি মেটাভার্স শব্দ এবং এর ধারণা প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। এরপর প্রযুক্তি দুনিয়ায় শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত স্নো ক্রেশ (Snow Crash) উপন্যাসে নিল স্টিফেনসন এমন একটি জগতের কথা বলেছিলেন, যেখানে সশরীরে না থেকেও উপস্থিত থাকবেন। গুগল আর্থের স্রষ্টা জানিয়েছেন, “স্টিফেনসনের মেটাভার্সের দুনিয়া তাকে গুগল আর্থ তৈরিতে অনুপ্রাণিত করেছে।”
বলা যায়, বিবর্তনের পরিক্রমায় ইন্টারনেটের পরের ধাপই হচ্ছে মেটাভার্স। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মার্ক জুকারবার্গ জানিয়েছেন, “তিনি এমন এক ইন্টারনেট ব্যবস্থা তৈরি করবেন, যেখানে ব্যবহারকারী কনটেন্ট দেখার সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজেও এর ভেতরে থাকবেন। ব্যবহারকারী অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত থাকার অনুভূতি পাবেন।” মার্ক জুকারবার্গ আরও বলেছেন, “মেটাভার্স শুধু ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নয়, এর চেয়েও বেশিকিছু।” মার্ক জুকারবার্গ এর ভাষ্যমতে আরও জানা যায়, “স্ক্রিনে দেখার পরিবর্তে ভার্চুয়াল পরিবেশে সরাসরি প্রবেশের সুযোগ প্রদান করবে এই মেটাভার্স।” ফেসবুক এর পাশাপাশি মেটাভার্স নিয়ে কাজ করছে মাইক্রোসফট ও চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, এনভিডিয়া। এনভিডিয়া’র অমনিভার্স প্ল্যাটফর্ম এর ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড কেরিস বলেন, “ইন্টারনেট এর মত অনেক কোম্পানি ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড ও পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে। ইন্টারনেটে যেমন এক সাইট থেকে আরেক সাইটে সংযোগ থাকে ঠিক তেমনি একটি মুক্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে এক কোম্পানির তৈরী ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করতে পারবেন অন্য কোম্পানির ওয়ার্ল্ডে থাকা ব্যবহারকারীগণ।” মেটাভার্স বিষয়ে পিছিয়ে নেই ভিডিও গেম কোম্পানিগুলোও। জনপ্রিয় গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, এপিক গেমস ইতিমধ্যে তাদের মেটাভার্স তৈরীর প্রতিশ্রুতিতে ১ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট করেছেন। এছাড়াও জনপ্রিয় ভিডিও গেম, রোবোলক্স এ যে কেউ শেখা, খেলা, তৈরী ও যোগাযোগ এর থ্রি-ডি এক্সপেরিয়েন্স পাবে। অর্থাৎ শুধুমাত্র ফেসবুক নয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরী বিভিন্ন ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড ও পরিবেশ হতে যাচ্ছে মেটাভার্স এর অংশ। তবে এক প্রতিষ্ঠানের মেটাভার্স অন্য প্রতিষ্ঠানের মেটাভার্স এর সাথে সংযুক্ত হওয়ার ব্যাপারটি সম্পর্কে এখনো অনেক অগ্রগতি বাকি রয়েছে।
ফেসবুক ও মেটাভার্স
সম্প্রতি মার্ক জুকারবার্গ তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির নাম “ফেসবুক” থেকে মেটা’য় রূপান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন। এ সময় তিনি তার কোম্পানির নতুন অধ্যায় শুরুর কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটেরও এক নতুন অধ্যায় সূচনার ঘোষণা দেন। জুকারবার্গের মতে, বর্তমানের মোবাইল ইন্টারনেট রূপান্তরিত হয়ে “এমবডিড” বা “শরীরী ইন্টারনেট” এ পরিণত হবে, মানুষ ইন্টারনেটের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকবে না, তা থেকে সরাসরি অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। গতবছর ২৮ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে অনুষ্ঠিত “কানেক্ট সম্মেলনে” ফেসবুকের নাম বদলে “মেটা” রাখা হয়। এবং এরপরই মেটাভার্স প্রযুক্তি বিষয়টি বিশ্বব্যাপী সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ সম্মেলনে ফেসবুকের সিইও মার্ক জুকারবার্গ বলেন, মেটাভার্স নামের ভার্চুয়াল জগতে মনোনিবেশ করতেই এমন নামকরণ করা হয়েছে। এ সময় ফেসবুক সদর দফতরে থাম্বস আপ লাইক লোগোটির পরিবর্তে সেখানে নীল রঙের “ইনফিনিটি”- র চিহ্ন প্রতিস্থাপন করা হয়। মার্ক জুকারবার্গ বলেন, “নতুন নাম মেটা এটাই প্রতিফলিত করে যে, আমরা সময়ের সঙ্গে আছি। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ফেসবুক পুরোপুরি মেটাভার্স কোম্পানিতে পরিণত হবে।” জুকারবার্গ আরও বলেন, “আমরা ইন্টারনেটের পরবর্তী অধ্যায়ের শুরুতে আছি এবং এটি আমাদের কোম্পানির জন্যও পরবর্তী অধ্যায়। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে প্রযুক্তি মানুষকে স্বাভাবিকভাবে যোগাযোগ করার এবং নিজেদের প্রকাশ করার শক্তি দিয়েছে। আমি যখন ফেসবুক শুরু করি, তখন শুধু ওয়েবসাইটে টেক্সট টাইপ করা যেতো। এরপর যখন ক্যামেরাসহ ফোন এলো, তখন ইন্টারনেট আরো ভিজ্যুয়াল (visual) হলো। ইন্টারনেটের গতি বাড়ার ফলে অভিজ্ঞতা শেয়ার করাও সমৃদ্ধ হলো। মানুষ ভিডিও আপলোড করতে পারলো। এভাবে আমরা ডেস্কটপ থেকে ওয়েবে, ওয়েব থেকে মোবাইলে চলে আসি। সেইসাথে টেক্সট থেকে ছবিতে এবং ছবি থেকে ভিডিও পর্যন্ত এসেছি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। পরবর্তী প্লাটফর্মটি আরো বেশি গভীর হবে, যা হবে এক জীবন্ত ইন্টারনেট। যেখানে আমরা শুধু এর দিকে তাকিয়ে থাকবো নয়, বরং অভিজ্ঞতার মধ্যেও থাকবো। আমরা এর নাম দিয়েছি মেটাভার্স। মেটাভার্সের বৈশিষ্ট্য ই হবে উপস্থিতির অনুভূতি দেয়া বাস্তবিকভাবে অন্য ব্যক্তি বা অন্য জায়গার সঙ্গে। এই লক্ষ্য ই সামাজিক প্রযুক্তির চূড়ান্ত স্বপ্ন। এ কারণেই আমরা মেটাভার্স নির্মাণে এগিয়ে এসেছি। মেটাভার্স এর কল্যাণে সম্ভব হবে, বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে একত্র হওয়া, কাজ করা, শেখা, খেলা, কেনাকাটা করা, সৃষ্টি করা, সেই সঙ্গে সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা যা আমাদের বর্তমান কম্পিউটার বা ফোন সম্পর্কে চিন্তাধারার সঙ্গে খাপ খাবে না। ভবিষ্যতে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত ছাড়াই অফিস, বন্ধুদের সঙ্গে কনসার্ট কিংবা মায়ের পাশে হলোগ্রাম হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে হাজির হতে সক্ষম হওয়া যাবে। এখন থেকে আমরা মেটাভার্স-ফার্স্ট হবো, ফেসবুক ফার্স্ট নয় অর্থাৎ মেটাভার্সই আমাদের প্রধান কাজ।” নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ফেসবুক এর এই প্রকল্প মেটাভার্স এর মাধ্যমে একাধিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মেটাভার্স এর মাধ্যম কি কি করা সম্ভব হবে।
– হরাইজন হোম :- এটি হলো ভার্চুয়াল ঘরের মত, যেখানে মেটাভার্স এর অন্যান্য ব্যবহারকারীগণ বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানাতে পারবে এবং একসাথে আড্ডা দিতে পারবে, ভিডিও দেখতে পারবে ও একসাথে গেম খেলতে পারবে।
– গেমিং :- মেটাভার্স এর বিশাল একটি অংশ হতে যাচ্ছে গেমিং। কানেক্ট কিনোট এর সময় ফেসবুক এর গেমিং প্ল্যাটফর্ম, কুয়েস্ট এ বিট সেবার গেমটি ১০০ মিলিয়ন ডলার আয়ের কথা জানান জুকারবার্গ। এছাড়াও কুয়েস্ট এর আপকামিং ভার্সনে রকস্টার গেমস এর জনপ্রিয় গেম “জিটিএ স্যানএন্ড্রিয়েস” আসতে যাচ্ছে।
– ভার্চুয়াল ওয়ার্কপ্লেস :- ভিআর ব্যবহার করে ভার্চুয়াল ওয়ার্কপ্লেসের কথা আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। মেটাভার্স ওয়ার্কপ্লেসে ফেসবুক একাউন্ট ছাড়াই আলাদা প্রফেশনাল একাউন্ট দিয়ে লগিন করা যাবে। যারা বাসা থেকে কাজ করেন তারা তাদের মেটাভার্স ওয়ার্কপ্লেসে ভার্চুয়ালি উপস্থিত হয়ে কাজ করতে পারবেন।
– ফিটনেস :- ইতিমধ্যে অনেকেই ভিআর ব্যবহার করে এক্সারসাইজ করে থাকেন। আগামী বছর নতুন একসেসরিজ (accessories) আনবে ফেসবুক এর প্যারেন্ট কোম্পানি মেটা, যার মাধ্যমে ভার্চুয়ালি ফিটনেস বজায় রাখা আরো সহজ হবে।
– ভিআর মেসেঞ্জার কল :- মেসেঞ্জার অ্যাপে বেশ কিছুদিন আগেই ভিআর সাপোর্ট এর ঘোষণা দেয় ফেসবুক। হেডসেট ব্যবহার করে বন্ধুদের কুইক মেসেজ পাঠানো যাবে। এছাড়াও ভিআর এর মাধ্যমে মেসেঞ্জার অডিও কল আসতে যাচ্ছে খুব শীঘ্রই। সাপোর্টেড প্ল্যাটফর্মগুলোতে একই সাথে ভিআর হেডসেট ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারবে ব্যবহারকারীগণ।
সংকটে ফেসবুক
বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মতে, “ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা একতরফা ভাবে বৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। নতুন ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করতে পারছে না ফেসবুক। এ জন্য ২০২১ সালের শেষ তিন মাসে প্রায় ১০ লক্ষ ব্যবহারকারীকে হারিয়েছে ফেসবুক।” মেটা এর নির্বাহীরা অন্যান্য দিকে প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেখছেন, যেমন হোয়াটসঅ্যাপে। তবে অ্যাপটি এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আয়ের মুখ দেখেনি। ফেসবুকের এই সংকট অনেকগুলো কারণে হয়েছে। প্রথম কারণ হিসেবে বলা যায়, বর্তমানে অ্যাপল মোবাইল ফোনের অপারেটিং সিস্টেমে একটি ‘অ্যাপ ট্র্যাকিং ট্রান্সপারেন্সি’ চালু রয়েছে। যাতে ফেসবুকের মতো অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে না পারে। এর ফলে অ্যাপল মোবাইল ব্যবহারকারীদের কার্যক্রম নিরীক্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে ফেসবুক। যার কারণে তাদের কাছে সঠিক বিজ্ঞাপনও পৌঁছাতে পারছে না ফেসবুক। দ্বিতীয় কারণ, বর্তমানে টিকটক সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট হয়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে। তথ্যমতে, ফেসবুকের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে চীনের এই ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ। টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন একশ কোটির বেশি এবং তা দ্রুত বেড়ে চলেছে। যা ফেসবুক ব্যবহারকারী কমার বড় একটি কারণ। এমনকি ফেসবুকের বিজ্ঞাপনে ভাগ বসিয়েছে গুগল। অনেক ব্যবসায়িক সংস্থা তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন এখন ফেসবুকে দেওয়ার বদলে গুগলে দিচ্ছে। এতে করেও বড় ক্ষতির মুখে ফেসবুক। তবুও জুকারবার্গ অনেকটা অন্ধের মত বিশ্বাস করছেন যে ইন্টারনেটের পরের প্রজন্মটি হচ্ছে মেটাভার্স। এর পেছনে বিপুল অর্থও ব্যয় করছেন তিনি। অথচ এখন পর্যন্ত এমন কোনো ইঙ্গিত মেলেনি যে তিনি এই বাজি জিতবেন। ২০১২ সালে ফেসবুক যোগাযোগ মাধ্যমটি যেভাবে বিদ্যুৎ এর গতিতে চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছিলো, মেটাভার্সের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে বিনিয়োগকারী ও কর্মীদের আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মার্ক জুকারবার্গ। এখন দেখার বিষয় নিজেদের লক্ষ্যে তারা সফল হতে পারে কি না!
Metaverse-1 এর অপেক্ষা কতদূর
গত কয়েক বছরে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। কিছু হেডসেট তৈরি হয়েছে যা মানুষের চোখের সঙ্গে এমন চালাকি করতে পারে যে, আপনি যখন ভার্চুয়াল পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াবেন তখন মনে হবে সবকিছু বাস্তব অর্থাৎ থ্রিডি-তে দেখতে পাবেন। প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, মেটাভার্স প্রযুক্তি তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। ইন্টারনেটের গতি আরো দ্রুত হওয়ার সাথে সাথে, বিশেষ করে ফাইভ-জি বাজারে আসার পরেই সব সমস্যার সমাধান ঘটবে। ১০ বছর আগে মেটাভার্স একটি ধারণার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এই মুহূর্তে এটি অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। আমরা মেটাভার্সের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমরা মেটাভার্সের জগতে প্রবেশ করে ফেলতে পারবো বলে আশা রয়েছে।
মেটাভার্স সম্পর্কে বিস্তারিত সব আলোচনা করে এখানেই শেষ করছি ব্লগটি। যেকোনো প্রশ্ন জাগলে নির্দ্বিধায় কমেন্টবক্সে কমেন্ট করুন। এবং টেকনোলজি সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। সেইসাথে আমাদের অন্যান্য আর্টিকেলগুলোও পড়তে পারেন। ধন্যবাদ।