Web 3.0 কি ? যেভাবে কাজ করবে ওয়েব 3.0

Web 3.0! আমরা অনেকেই পরিচিত শব্দটির সাথে অথচ বিস্তারিত জানি না। জানার কিছুটা আগ্রহ হলেও ভয় হয়, ধুর বাবা আমি বুঝবো না। ব্যস এটুকু বলেই আমরা চুপসে যাই নতুন কিছু জানতে। ভয়কেই আমাদের করতে হবে জয়। তো শুরু করা যাক জ্ঞান আহরণে। ঝাঁপিয়ে পড়ি আমরা নিচের প্যারায়।

বর্তমানে আমরা সবাই টেকনোলজির সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গিয়েছি। সেই সুবাদে আমরা web 3.0 সম্পর্কেও শুনেছি। Web 3.0 এর সর্বপ্রথম পয়েন্ট হলো আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতাই পাল্টে যাবে। সেটি সম্ভব হবে web 3.0 ব্লকচেইনের মাধ্যমে। Web 3.0 ও metaverse একসাথে যুক্ত হবে এবং একসাথে কাজ করবে। Web 3.0 জানার আগে জেনে নেয়া যাক web 1.0 ও 2.0 সম্পর্কে, তাহলে আমাদের ব্যাসিক ধারনা স্পষ্ট হয়ে যাবে।

Web 1.0

তখন ১৯৯১ থেকে ২০০৪ সাল। আমাদের ইন্টারনেট জগৎ ছিলো ভিন্ন। তখন ওয়েব নির্মাণ হতো কিন্তু টেকনোলজি তেমন উন্নত ছিলো না। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্য ছিলো যে, তখন ইন্টারনেটে কোনো Photos বা videos ছিলো না, তখন শুধুমাত্র Text দেখা যেতো। তখনকার সময়ে কোনোকিছু সার্চ করলে আমরা কন্টেন্ট অথবা তথ্য শুধুমাত্র টেক্সট আকারে পড়তে পারতাম। এই web এর নাম দেয়া হয় web 1.0.

Web 2.0

সময়ের সাথে গোটা বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে, এই পরিবর্তনের ক্ষেত্রে টেকনোলজি সবচেয়ে এগিয়ে। আমরাও এখন আপডেট হচ্ছি, নতুন নতুন টেকনোলজি ব্যবহার করতেই বেশি পছন্দ করি। এই যেমন Cryptocurrency, আগে মানুষ জানতোই না এটি কি! আর এখন আমরা এটির সাথে পরিচিত এমনকি ব্যবহারও করছি। ২০০৪ সালে আসে web 2.0 এবং সাথে নিয়ে আসে বিপুল পরিবর্তন। তখন থেকে মানুষ যেকোনো ইনফরমেশন টেক্সটের পাশাপাশি photo ও video দেখতে পান। বর্তমান সময়েও আমরা web 2.0 ব্যবহার করছি। এই web 2.0 তে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্ম। Web 2.0 ইন্টারনেট জগৎকে নিয়ে গিয়েছে একধাপ এগিয়ে। আমরা ঘরে বসে সারাবিশ্বকে অনুসরণ করতে পারি। ঘরে বসে জেনে যাই, সারাবিশ্বের খবরাখবর। তবে এই web 2.0 এর সবচেয়ে সুবিধা হলো ফেসবুক, গুগল, অ্যামাজনের মত বড় কোম্পানিদের জন্য। আজকাল আমরা সবাই ইন্সটাগ্রাম, ফেসবুক, টুইটার, গুগল, ইউটিউব ব্যবহার করি। আমরা তাদের প্লাটফর্ম বিনামূল্যে ব্যবহার করছি। আর এতেই আমরা মনে করি, তারা আমাদের বিনামূল্যে পরিষেবা দিচ্ছে। কিন্তু না, এই বিশ্বে কোনোকিছুই বিনামূল্য বা নিঃস্বার্থ হয় না। গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজন এর মতো কোম্পানিগুলি আমাদের Data ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে তাদের সার্ভারে সংরক্ষণ করে রাখা তথ্য দিয়ে। খেয়াল করে দেখবেন, আমরা যা ভাবি বা অনুসন্ধান করি সেটিরই বিজ্ঞাপন আমাদের সামনে আসে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু কিভাবে? এই সবটাই সম্ভব হচ্ছে আমাদের ব্যবহারকৃত সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ও ভিউয়ের তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এইভাবেই তাদের কাছে আমাদের নিজের সমস্ত তথ্য সংরক্ষণ থাকে। আর এই তথ্য অনুযায়ী তারা আমাদের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করেন বিভিন্ন কোম্পানি থেকে। আশা করি আপনারা web 2.0 সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন।

এবার জেনে নেয়া যাক web 3.0 কি ও এটির সুবিধা।

Web 3.0 কি

Web এর তিনটি ভার্সন রয়েছে। Web 1.0, Web 2.0, Web 3.0। ১৯৮৯ সালে Tim Berners-Lee web 1.0 নির্মাণ করেন। এর কিছু বছর পরই web 2.0 নির্মান হয়। বর্তমানে আমরা web 2.0 ব্যবহার করছি। ফেসবুক, টুইটার এসবই web 2.0 এর মধ্যে পড়েছে। আগামী সময়ে আরও একটি web আসতে চলেছে, এবং সেটি ই হলো web 3.0। Web 3.0 সম্পূর্ণভাবে Artificial intelligence ও blockchain technology এর মাধ্যমে কাজ করবে। যার ফলে web 2.0 এর ডাটা চুরির ভয়টি আর থাকবে না। কারণ blockchain কোনো এক ব্যক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয় না। এটি ছড়ানো database যার ফলে আমাদের নিজস্ব data শুধুমাত্র আমাদের কাছেই access থাকবে। আমাদের data কোনো কোম্পানি যেমন ফেসবুক, টুইটারের কাছে যাবে না।

Web 3.0 এর সুবিধা

Web আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ করে দিয়েছে video call অথবা টেক্সটের মাধ্যমে। Web 3.0 আমাদের জন্য নিয়ে আসছে আরও সুবিধা। Web 3.0 তে vr headset এর মাধ্যমে অপর ব্যক্তিকে নিজের চোখের সামনে দেখতে পারবো আর্টিফিশিয়াল ভাবে।

  • এই web 3.0 আমাদের ইন্টারনেট জগৎকে করবে আরও সুরক্ষিত ও শক্তিশালী। বর্তমানে web 2.0 এর সুবাদে বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাটফর্ম আমাদেরকে তাদের অধিকারত্ব দেখিয়ে থাকে। কিন্তু web 3.0 তে কোনো অধিকারত্ব থাকবে না। শুধু থাকবে একটি head of Department, যা সবকিছুকে কন্ট্রোল করবে।
  • Web 3.0 তে আমাদের data কোনো সার্ভারে সংরক্ষণ হবে না। Data সংরক্ষণ হবে বিভিন্ন Network এ। আর এতে করে হ্যাকারদের পক্ষে আমাদের Data track করা কঠিন হয়ে যাবে।
  • Web 3.0 তে নিজের data এর মালিকানা শুধু নিজের কাছেই থাকবে। বর্তমানে যেমন বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাটফর্ম আমাদের data তাদের সুবিধার্থে ব্যবহার করে, তাদের কাছে আর সেই সুযোগ থাকবে না।
  • Web 3.0 এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে, Artificial intelligence। বর্তমানে আমরা কিছু সার্চ করলে, এর ফলাফল মাঝে মাঝেই ভুল আসে বা এমন কিছু আসে যা আমাদের চাহিদার সাথে মিল-ই নেই। এতে করে আমাদের বুঝতে সমস্যা হয়ে যায়। তাই web 3.0 সব সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে আরও সহজ ও সঠিকভাবে ফলাফল দেখাবে Artificial intelligence এর মাধ্যমে।

আশা করি web 3.0 কি ও web 3.0 এর সুবিধা ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন। টেকনোলজি এর ব্যাপারে আরও জানতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। সেইসাথে ওয়েবসাইটে থাকা আরো অন্যান্য আর্টিকেলগুলোও পড়তে পারেন। ধন্যবাদ।