পৃথিবীর বুকে অজানা রহস্যে ঘেরা যত স্থান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল (Bermuda Triangle)। প্রকৃতির অন্যতম বড় রহস্য বলা হয় এই বার্মুডা ট্রায়্যাঙ্গেল -কে। এটি অবস্থিত উত্তর অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের একটি ত্রিকোণ আকৃতির এলাকায়। অসংখ্য মানুষ, বিমান, জাহাজ এই ত্রিকোণ রহস্যের মধ্যে পড়ে হারিয়ে গিয়েছে চিরতরে। তবে এই রহস্যের সঠিক ব্যাখ্যা বিজ্ঞানও দিতে পারেনি। যে সকল কারণগুলো বলা হয়েছে, তার বেশির ভাগই অনুমান ভিত্তিক। আজ পর্যন্ত যত গবেষণা হয়েছে কোনো কিছুতেই এটির রহস্য উদঘাটনের সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। পৃথিবীর অন্য যতো রহস্যে ঘেরা স্থান রয়েছে সবগুলো থেকে এই স্থানকে গুরুত্ব দেয়ার মূল কারণটি হলো, ভয়াল পরিবেশে নৌযান ও আকাশযানের বহু যাত্রীর অকাল প্রাণহানি হয়েছে। এ এমন এক জায়গা যেখানে একবার প্রবেশ করলে বের হবার বা কোনো তথ্য বের করে আনার অবকাশ নাই। অনেকের মতে এই জায়গাটিকে বলা হয় ডেভিল ট্রায়াঙ্গেল।
উত্তর অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় ৫ লাখ স্কোয়ার কিলোমিটার জায়গা জুড়ে তৈরি হওয়া এই রহস্যটির গবেষণা এখনো কুল-কিনারা করতে পারে নি। ত্রিভূজের বিস্তৃতির বর্ণনায় বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন মত দিয়েছেন। কেউ মনে করেন এর আকার ট্রাপিজয়েডের মত, যা ছড়িয়ে আছে স্ট্রেইটস অব ফ্লোরিডা, বাহামা এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপূঞ্জ এবং ইশোর পূর্বদিকের আটলান্টিক অঞ্চল জুড়ে, আবার কেউ কেউ এগুলোর সাথে মেক্সিকোর উপসাগরকেও যুক্ত করেন। তবে লিখিত বর্ণনায় যে সাধারণ অঞ্চলের ছবি ফুটে ওঠে তাতে রয়েছে ফ্লোরিডার আটলান্টিক উপকূল, সান হোয়ান, পর্তু রিকো, মধ্য আটলান্টিকে বার্মুডার দ্বীপপূঞ্জ এবং বাহামা ও ফ্লোরিডা স্ট্রেইটস এর দক্ষিণ সীমানা, মূলত এখানেই ঘটেছে অধিকাংশ দূর্ঘটনা। গত ১০০ বছরে বার্মুডা ট্রায়াঙ্গের গোলকধাঁধায় প্রাণ হারিয়েছে ১০০০ এর বেশি মানুষ। প্রতিবছর এখানে হারিয়ে যায় অন্তত ৪টি বিমান এবং ২০টি জাহাজ। এই ট্রায়াঙ্গলের একটি রহস্যময় অঞ্চল হলো জলীয়কেন্দ্রের একটি বিন্দু। ফ্লোরিয়া থেকে বাহামা এর মধ্যে একটি অঞ্চলকে বলা হয় রেডিও ডেড স্পট। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, সেখানে কোনো বেতারতরঙ্গ প্রবেশ করতে পারে না এবং বের হতেও পারে না। এমন একটি বিন্দু আছে যেখানে কম্পাস অচল হয়ে যায়। বার্মুডা ট্রায়্যাঙ্গেল এ এমনসব দূর্ঘটনা হওয়ার পেছনে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই অঞ্চলের উপর যে ষটকোণ (Hexagonal) মেঘের স্তর রয়েছে সেখানে তৈরি হয় বায়ু বোমা। প্রতি ঘণ্টায় ১৭০ মাইল বেগে বয়ে যাওয়া হাওয়া এবং বায়ু বোমার প্রভাবেই পথ হারায় জাহাজ ও বিমান। এই বায়ু বোমার কারণে মহাসাগরের এ অংশের ঢেউয়ের উচ্চতা ছাড়িয়ে যায় ৪৫ ফুট। সর্বপ্রথম এই জায়গাটির আবিষ্কার করেন আমেরিকার একজন ব্যক্তি, নাম কলম্বাস। তার বর্ণনামতে, “তার জাহাজের নাবিকেরা বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল পাড়ি দেয়ার সময় দেখেছিল আলোর নাচানাচি ও আকাশে ধোঁয়া।” এছাড়া কলম্বাস আরো লিখেছেন যে, “এই জায়গায় এসে তার কম্পাসটিও ভুল নির্দেশনা দিচ্ছিলো।”
আজ পর্যন্ত অসংখ্য জাহাজ এবং উড়োজাহাজ মিলিয়ে গেছে এই ট্রায়াঙ্গেলে, যার কোনো চিহ্ন আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, এ পর্যন্ত ৫০টি বাণিজ্যিক জাহাজ ও ২০ টি বিমান হারিয়ে গেছে এই বার্মুডা ট্রায়াঙ্গলে। ১৯৬৫ সালে বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল সম্পর্কে সর্বপ্রথম একটি বই রচনা করেন লেখক ভিনসেন্ট এইচ গাদিস। বইটির নাম হলো, “Invisible Horizon: True Mysteries of the Sea”। আজ পর্যন্ত বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল রহস্যকে ঘিরে দুইটি ইংরেজি চলচিত্রও নির্মাণ হয়েছে। একটি হলো Lost in the Bermuda Triangle (1998) ও আরেকটি হলো Bermuda Tentacles (2014)।
বার্মুডা রহস্যের ইতিহাস
১৯৫০ সালের ১৬ ই সেপ্টেম্বর, “অ্যাসোসিয়েট” প্রেস এর এক প্রবন্ধে সাংবাদিক ই ভি ডাবলিউ জোনস প্রথম বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেলের অস্বাভাবিক ঘটনার কথা লিখে এটিকে নজরে আনেন। এরপর ১৯৫২ সালে “ফেট” ম্যাগাজিন এর জর্জ এক্স সান্ড লিখেন, “Sea mystery at our back door”। তিনি ৫ জন ইউএস নেভি সহ ১৯ নং ফ্লাইটের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদটি ছাপেন। এরপরই শুরু হয় বার্মুডা রহস্য! মার্কিন নেভির তথ্য অনুযায়ী, গত ২০০ বছরে এ এলাকায় কমপক্ষে ৫০টি বাণিজ্যিক জাহাজ এবং ২০টি বিমান চিরতরে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। ১৯৬৮ সালের মে মাসে হারিয়ে যাওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক জাহাজের ঘটনা সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলে। এরপর এই রহস্যময় বার্মুডার একটি দিক জানা যায় যে, কোনো জাহাজ ত্রিভুজ এলাকাটিতে প্রবেশ করার কিছুণের মধ্যে বেতার তরঙ্গ প্রেরণে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং এর ফলে জাহাজটি উপকূলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হয়। এবং একসময় তা দিক নির্ণয় করতে না পেরে রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। ঘটনা তদন্তে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয় তা হলো, “এলাকাটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বাভাবিকের চাইতে কুয়াশা অনেক বেশি এবং এর ঘনত্বও তুলনামূলকভাবে বেশি। ফলে নাবিকেরা প্রবেশের পরই দিক হারিয়ে ফেলে এবং তাদের মধ্যে একপ্রকার বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। হয়তো এ বিভ্রান্তির ফলেই তারা যথাযথভাবে বেতার তরঙ্গ পাঠাতে পারে না।”
বার্মুডার বিখ্যাত কিছু দূর্ঘটনা
১. ১৯১৮ সালে ইউএস নেভির কয়েকটি জাহাজ নিখোঁজ হয়েছিলো। এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়েছিলো সাইক্লোপস জাহাজের অদৃশ্য হওয়া ঘটনাটি। ১৯ হাজার টন ভারী জাহাজটি বারবাডোস থেকে বাল্টিমোরের দিকে যাত্রা করেছিল। জাহাজটিতে ছিল ৩০৯ জন যাত্রী। এই জাহাজটিও বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেলে অদৃশ্য হয়ে যায়।
২. ১৯৪১ সালে বার্মুডার রহস্যময় জায়গাটিতে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলো তিনটি ট্যাঙ্কার, একটি চার ইঞ্জিনের উড়োজাহাজ আর একটি ট্রলার।
৩. ১৯৪৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেলে একটি জাহাজ রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। জাহাজটির অন্তর্ধান কাহিনীও অদ্ভুত। তবে এটি বার্মুডার সীমানার মধ্যে ঘটেনি, তবুও এটিকে বার্মুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটিকে বলা হয়, মেরি সিলেক্ট অব দি স্কাই।
৪. ১৯৪৯ সালের ১৭ জানুয়ারী স্টার এরিয়েল নামের একটি বিমান লন্ডন থেকে জ্যামাইকা যাচ্ছিল। সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে এটি বার্মুডার আকাশে উড়ে। তখন আবহাওয়া ছিল স্বাভাবিক ও সুন্দর আর সমুদ্রও ছিল শান্ত। উড়ার ৫৫ মিনিট পর বিমানটি অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর অনেক অনুসন্ধান হয় কিন্তু সমুদ্রের কোথাও বিমানটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া যায় না। পরদিন রাতে এক অনুসন্ধানী দল জানায়, সমুদ্রের বিশেষ কিছু জায়গা থেকে অদ্ভূত একটি আলোর আভাস দেখা যাচ্ছে।
৫. সেই সালেই আরেকটি বিমান নাসাউ থেকে বাহামার গ্রান্ডটার্ক দ্বীপের দিকে যাচ্ছিলো। দ্বীপের কাছাকাছি এসে পাইলট বেতার সংকেতে জানায়, “আমি কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছি না। দুটি অজানা দ্বীপের চারপাশে চক্কর মারছি। অথচ নিচে কিছুই দেখেতে পাচ্ছি না। এই ফাঁক থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় আছে কি?” এরপর বিমানটি অদৃশ্য হয়ে যায়। যারা এই দুর্ঘটনার সাক্ষী ছিলো, তারা দেখতে পেয়েছিলো বিমানটি প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে দ্বীপের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে অদৃশ্য হয়ে যায়।
৬. ১৯৫০ সালে বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল এ রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলো একটি ডিসি-৩ বিমান। সেটি সানজুয়ান থেকে সিয়ামি যাচ্ছিলো। ভোর ৪টা ১৩ মিনিটে বিমানটি থেকে শেষ বেতার বার্তা এসেছিলো, “আমরা অবতরণ ক্ষেত্রের দিকে এগিয়ে চলেছি। দক্ষিণে আর মাত্র পঞ্চাশ মাইল দূরে সিয়ামি বিমানবন্দর। আমরা সিয়ামি শহরের আলোকমালা দেখতে পাচ্ছি। সব ঠিক আছে। কোনো গোলমাল নেই। অবতরণের নির্দেশের অপেক্ষায় রইলাম।” এই শেষ বার্তা পাঠিয়ে বিমানটি অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর এটির আর কোনো হদিস মেলেনি।
৭. বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেলের আরেকটি বিখ্যাত ঘটনা হলো ১৯৬২ সালের এপ্রিল মাসে নিখোঁজ হওয়া ফ্লাইট নাইনটিন। আর এটি নিয়ে আমেরিকান লিজান ম্যাগাজিনে লেখা হয়েছিলো। সেখানে বলা হয়েছিলো, এই ফ্লাইটের দলনেতার থেকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘ডব ফড়হ শহড় যিবৎব বি ধৎব, যব ধিঃবৎ রং মৎববহ, হড় যিরঃব’ -এর অর্থ হলো, আমরা কোথায় আছি জানি না, সবুজ রঙের পানি, কোথাও আলোকিত কিছু নেই।
রহস্যে ঘেরা এই বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল। বহুকাল ধরে, এই আশ্চর্য ত্রিভুজটি ঘিরে বিস্ময়ের খনি জমা হচ্ছে বিশ্ববাসীর মনে! এ অঞ্চলের মূল রহস্যময় একটি দিক হলো, কোনো জাহাজ বা বিমান এই ত্রিভুজ এলাকায় প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বেতার তরঙ্গ প্রেরণে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং এর ফলে উপকূলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হয়। একসময় এটি দিক ও নির্ণয় করতে পারে না। অতঃপর রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। কেন হয় এমন, কি ই বা এর আসল কারণ? কোনো উত্তরই এখনো পরিষ্কার না বিশ্ববাসীর কাছে। আজ অব্দি অনেক গবেষণা হয়েছে এই ট্রায়াঙ্গেল সম্পর্কে, তারপরও সুরাহা মেলে নি। সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানীদের থেকে উঠে এসেছে বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল এর আসল রহস্য। তারা বর্ণনা করেছেন, “এই ত্রিভূজের উপর দিয়ে মেক্সিকো উপসাগর থেকে উষ্ণ সমুদ্র স্রোত বয়ে গেছে। এই তীব্র গতির স্রোতই অধিকাংশ দূর্ঘটনার কারণ। এখানকার আবহাওয়া এমন যে হঠাৎ করেই ঝড় ওঠে আবার থেমে যায়, গ্রীষ্মে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। টেলিযোগাযোগ, রাডার ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তি পৌঁছানোর পর এমন অঞ্চলে জাহাজডুবি ঘটনা হয় না বললেই চলে।” ২০১৬ সালে বিখ্যাত আবহাওয়াবিদ র্যান্ডি কারভ্যানি -সহ বেশ কিছু বিজ্ঞানী ব্যাখ্যা দেন, “বার্মুডা ট্রায়েঙ্গেল এর রহস্যের পিছনে রয়েছে এক রকম ষড়ভুজাকৃতি মেঘ (Hexagonal Cloud)। উত্তর অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের বার্মুডা দ্বীপে ২০ থেকে ৫৫ মাইল জুড়ে ষড়ভুজাকৃতি মেঘ তৈরি করে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ু। যার গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭০ মাইল। এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বায়ুকে বলা হয় ‘এয়ার বম্ব’। এই বায়ু প্রায় ৪৫ ফুট উচ্চতার ঝড় তৈরি করতে পারে। যার ফলে বার্মুডা ট্রায়েঙ্গেল দিয়ে যাওয়া জাহাজ বা প্লেন দূর্ঘটনার কবলে পড়ে।” অন্যদিকে, অনেক জাহাজ এবং বিমান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার তদন্তে দেখা গেছে এর অধিকাংশই, চালকের ভুলের কারণে দূর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। এছাড়া অনেক নিখোঁজ ঘটনার উপসংহারেই পৌঁছানো যায়নি, কারণ অনুসন্ধানের জন্য কিছু পাওয়া বা জানা সম্ভব হয়নি। কম্পাসের ভুল দিক নির্দেশনা নিয়েও রয়েছে অনেক বিভ্রান্তি। অনেক বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেলের ঘটনা ভুল কম্পাস নির্দেশনার সাথে জড়িত। বিজ্ঞানীদের মতে, “কম্পাস থেকে চুম্বক মেরুর দূরত্বের উপর ভিত্তি করে এটির দিক নির্দেশনায় বিচ্যূতি আসে। উদাহরন হিসেবে বলা যায়- যুক্তরাষ্ট্রে শুধুমাত্র উইসকনসিন থেকে মেক্সিকোর উপসাগর পর্যন্ত সরলরেখা বরাবর চৌম্বক উত্তর মেরু সঠিক ভাবে নির্দেশ করে। এই সাধারন তথ্য যে কোন দক্ষ পথপ্রদর্শকের জানে। কিন্তু সমস্যা হলো সাধারন মানুষকে নিয়ে, যারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। ত্রিভূজ এলাকা জুড়ে কম্পাসের এমন বিচ্যূতি তাদের কাছে রহস্যময় মনে হয়। কিন্তু এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।” সেইসাথে বিজ্ঞানীরা এটিও বলেছে, “বার্মুডা ট্রায়েঙ্গেলের মধ্যে কোনো রহস্য নেই। কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে বটে তবে ঐগুলো শুধুমাত্র দুর্ঘটনা বৈ কিছু নয়। কারণ ঐ এলাকা দিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের প্রচুর জাহাজ চলাচল করে। উড়োজাহাজের যাতায়াতও খুব বেশি। এ রকম এলাকায় মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। সেটা স্বাভাবিক হলেও আমরা সাধারণ জনগণ রহস্যের বেড়াজাল মনে করি। আসলে এর মধ্যে রহস্যের কিছু নেই। বার্মুডা ট্রায়েঙ্গেলের চিহ্নিত জায়গায় অর্থাৎ এই ত্রিভূজের মধ্যে অবস্থিত ফ্রীপোর্ট শহরে একটি বড় জাহাজ কারখানা আর একটি বিমান বন্দর রয়েছে, যা কোন গোলযোগ ছাড়াই বছরে ৫০,০০০ টি বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা করছে।” এই তথ্যগুলো এসেছে বিজ্ঞানীদের ধারনা থেকে। তবুও সাধারন মানুষদের কাছে এগুলো অবিশ্বাস্য। তারা বিশ্বাস করে বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল এর অন্য কোনো রহস্য রয়েছে। দেখা যাক, সামনে বার্মুডা ট্রায়াঙ্গেল এর রহস্য পাকাপোক্তভাবে উদ্ঘাটন হয় কি না!
এই ছিলো বার্মুডা ট্রায়েঙ্গেল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। যেকোনো প্রশ্ন জাগলে নির্দ্বিধায় কমেন্টবক্সে কমেন্ট করুন। সেইসাথে আমাদের অন্যান্য আর্টিকেলগুলোও পড়তে পারেন। ধন্যবাদ।